সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২২ পূর্বাহ্ন
বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি॥ ভোলার বোরহানউদ্দিনে চলমান করোকালে আখের বাম্পার ফলন হয়েছে।তবে ফলন ভালো হলেও করোনায় বাজার পরিস্থিতির নি¤œমুখীর আশঙ্কায় আখ চাষিরা আগেই আখ খেতে রেখে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে জানান আখ চাষিরা।এখন পাইকাররা খেত থেকে আখ তুলে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছেন।ফলে আখ চাষিরা করোনা আতঙ্কে চলমান বাজার মূল্যের লাভ পাওয়া হয়ে ওঠেনি।
কৃষি অফিসের ভাষ্য, এ বছর ১ শত ৩০ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৪৬০ মে.টন চিবিয়ে খাওয়া আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।হেক্টর প্রতি ৪৫ মেট্রিক টন আখ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।এছাড়া অনুকূল আবহাওয়া,সঠিক পরিচর্চার কারণে আশানুরুপ ফল পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ সুগার ক্রপ গবেষণা ইন্সস্টিটিউটের সরেজমিন বিভাগ চিবিয়ে খাওয়া আখ চাষের উপর ৬০ জন চাষীকে স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন উপকরণ সরবরাহ করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, কিছু এলাকায় কারণে যথাসময়ে ছত্রাকজনিত রোগ রেড রটের(লাল পচা) ঔষধ না দেয়ায় ওই আখ বিভিন্নস্থানে লাল রঙ হয়ে যায়। তবে অধিকাংশ আখ চাষিরা জানান, গত বছরের অভিজ্ঞতায় তাঁরা যথাসময়ে কীটনাশক ব্যবহার করেছেন। পাশাপাশি মাজরা পোকার আক্রমন এবার বেশী ছিলো।এজন্য ঔষধ খরচ একটু বেশী হয়েছে। উপজেলার সব এলাকায় আখ চাষ হলেও এর সিংহভাগ উপজেলার বড়মানিকা ও কুতুবা ইউনিয়নের উৎপাদন হয়।
বড়মানিকা ইউনিয়নের তিন নাম্বার ওয়ার্ডের বর্গা চাষী ইসহাক, খোরশেদ আলম, আব্দুল মালেক ও কামাল হোসেন জানান, বাংলাদেশ সুগার ক্রপ গবেষণা ইন্সস্টিটিউটের সরেজমিন বিভাগ গত বছরের পৌষ মাসে রঙ বিলাস ও অমৃত জাতের বীজ আখ সরবরাহ করেছে।এছাড়া তারা নিজেরা সংগ্রহ করে সিও-২০৮ জাতের আখ ও বোম্বাই-২০৮ জাতের চাষ করেছেন।
আখ চাষী মো. ইসহাক জানান, ৪৪ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করে তার ৫৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।পুরো খেত তিনি ঠিকা ১ লাখ ২১ হাজার টাকায় বিক্রি করে ফেলেছেন। মো. রেশাদ আলী ৪০ শতাংশে আখ চাষ করে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা।বিক্রি করেছেন ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। ৫৪ শতাংশ চাষ করে আব্দুল মালেক ও কামাল হোসেন উভয়ের খরচ পড়েছে ৬৮ হাজার টাকা, বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা।কুতুবা ইউনিয়নের ছয় নাম্বার ওয়ার্ডের ছোটমানিকা গ্রামের আখ চাষী জামাল দালাল ৪৮ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করে খরচ পড়েছে ৬০ হাজার টাকা, বিক্রি নেমেছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। ৪০ শতাংশে আখ চাষ করে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে হাবিব ফরাজীর, বিক্রি নেমেছে ৯০ হাজার টাকা।
চাষী রেশাদ আলী, ইসহাক, হোসেন মোল্লা জানান, করোনার কারণে বাজার কী হয় এ আশঙ্কায় প্রতি ৪ শতাংশের যে আখ আমরা ১০-১১ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি তা এখন পাইকারা ২০-২২ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন।কৃষকরা আরো জানান, কৃষি অফিসের লোকজন তাদের নানা পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেছেন। কৃষকরা আরো জানান, আখ বিক্রি ছাড়াও প্রতি ৮ শত আখ খেত থেকে পরিবহনে তুলে দিলে ২ হাজার টাকা করে বাড়তি আয় হয়।
বড়মানিকা ইউনিয়ন অংশের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন ও কুতুবা ছাগলা ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ ফাহিম জানান, আখ চাষীদের পাশে থেকে সব সহায়তা করা হয়েছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক জানান, আখচাষে ঝুঁকি কম, মূলধন কম কিন্তু লাভ বেশী। এছাড়া একটা পর্যায় aপর্যন্ত এর সাথে একাধিক সাথী ফসল করা যায়। বর্তমানে চিবিয়ে খাওয়া জাতের আখ চাষকে জনপ্রিয় করতে উদ্ধুদ্ধকরণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
Leave a Reply